“বিদ্রোহী” তৃণমূল বিধায়ক মিহির গোস্বামীর বাড়িতে বিজেপি সাংসদ নিশীথ। উত্তরবঙ্গজুড়ে জল্পনা।
নিউজ বেঙ্গল ৩৬৫ ডেস্ক: ব্লক থেকে জেলা, কোন কমিটিতেই নিজের অনুগামীদের স্থান না হওয়ায় দলের সমস্ত পদ ছেড়েছেন পুজোর আগেই। এমনকী নিজের কার্যালয় থেকে খুলে ফেলেছেন দলীয় পতাকাও। এখানেই শেষ নয়, সাংগাঠনিক বৈঠকে জোড়াফুল শিবিরের পরামর্শদাতা প্রশান্ত কিশোরের বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগরেও দিয়েছিলেন কোচবিহার (দক্ষিন) এর তৃণমূল বিধায়ক মিহির গোস্বামী। যা নিয়ে রাজনৈতিক মহলের মত ছিল, পিকে নয়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘনিষ্ঠ জেলার রাজনীতিতে আপাত স্বচ্ছভাবমূর্তির এই বিধায়কের আসল টার্গেট ছিল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ছাড়তে চেয়েছিলেন বিধায়ক পদও। এহেন বিদ্রোহী তৃণমূল বিধায়ক মিহির গোস্বামীর বাড়িতে বৃহস্পতিবার দুপুরে আচমকাই হাজির হন কোচবিহারের বিজেপি সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক। আধঘণ্টা একান্তে আলোচনা হয় তাঁদের। যা নিয়ে নতুন জল্পনা শুরু হল উত্তরবঙ্গের রাজনীতিতে। যদিও মিহির গোস্বামী এবং নিশীথ প্রামাণিকের দাবি এটি সৌজন্য সাক্ষাৎ। কোচবিহার (দক্ষিন)-এর তৃণমূল বিধায়ক মিহির গোস্বামীর বক্তব্য,” এটা সৌজন্যের সাক্ষাৎ। ও তো আগে আমাদের দলেই ছিল, বিজয়ার পর সুযোগ পেয়ে দেখা করতে এসেছে, এটার পিছনে অন্য কোনও কারণ খোঁজার দরকার নেই।” যদিও তৃণমূল বিধায়কের মতো সহজ অঙ্কে বিষয়টি দেখতে নারাজ কোচবিহারের বিজেপি সাংসদ। সৌজন্য সাক্ষাতকার বললেও পাশাপাশি বেশ ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্যও করেছেন তিনিও। নিশীথ অধিকারী বলেন,” আমি উনার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলাম। আশীর্বাদ নিয়ে গেলাম। তবে উনার মতো মানুষ যে কোনও দলের সম্পদ, উনি যদি বিজেপিতে আসতে চান স্বাগত।” রাজনৈতিক মহলের মতে, এবার লোকসভা নির্বাচনে দার্জিলিং থেকে মালদা পর্যন্ত শূন্য হাতে ফিরতে হয়েছে তৃণমূলকে। এমনকী সাংগাঠনিক দিক থেকেও দক্ষিনের থেকে অনেকটাই নড়বড়ে উত্তরবঙ্গ। গোটা উত্তরবঙ্গ জুড়ে স্বচ্ছভাবমূর্তির জন্য যথেষ্টই গ্রহণযোগ্য মিহির গোস্বামী। সেই ক্ষেত্রে কোচবিহার (দক্ষিন)-এর এই বিধায়ককে দলে টানতে পারলে বিধানসভা নির্বাচনে লাভ গেরুয়া শিবিরের। এমনিতেই দলের উপর যথেষ্টই ক্ষুব্ধ মিহির গোস্বামী। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, মমতা ঘনিষ্ঠ এই বিধায়কের পদ্ম শিবিরে যাওয়া শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষা। আর বিজেপিতে যোগদান করলে জেলায় ঠিক কতটা গুরুত্ব পাবেন তা জানতেই বিজেপি সাংসদের সঙ্গে আলোচনা করেন মিহির গোস্বামী। অপরপক্ষের দাবী, বিজেপিতে নিজে যথেষ্ট গুরুত্ব পাচ্ছেন না নিশীথ। মন্ত্রীত্ব তো মেলেইনি, এমনকী কোন কমিটির চেয়ারম্যানের পদও দেওয়া হয়নি তাকে। যা নিয়ে নিশীথ ঘনিষ্ঠদের মধ্যে যথেষ্টই ক্ষোভ রয়েছে। তার উপর যার কারণে দল ছেড়েছিলেন নিশীথ, সেই রবীন্দ্রনাথ ঘোষও এখন আর জেলা সভাপতি নেই। তাই নিজের অনুগামীদের ফের তৃণমূলে ফেরত পাঠাতে চান নিশীথ। এমনকী নিশীথ অধিকারী নিজেও তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াচ্ছেন বলে দাবী দলেরই কোচবিহার তৃণমূলের জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায়। তার বক্তব্য, “সৌজন্য সাক্ষাৎ না অন্য কিছু, তা ওঁরাই বলতে পারবেন। তবে এটাও হতে পারে নিশীথ নিজেই হয়তো তৃণমূলে যোগদান করতে চাইছেন, তাই আমাদের বর্ষীয়ান নেতার সঙ্গে দেখা করে থাকতে পারেন।”