প্রণববাবু নিজের মূর্তি দেখে বলেছিলেন, ‘এতো একেবারে জীবন্ত’।
সৌরেন দাস, নিউস বেঙ্গল 365,আসানসোল: টি,ভি তে খবর টা দেখেই স্তব্ধ হয়ে গেছিলাম, কিছুতেই বিশ্বাস করতে পারছিম না প্রনব মুখর্জ্জী আর নেই। তার অসুস্থতার খবর শুনে বারে বারে ভগবান কে ডেকেছি উনি যেন জলদি সুস্থ হয়ে উঠেন কিন্তু শেষরক্ষা হলনা। এই ভাবেই ছলছল চোখে স্মৃতি চারন করলেন আসানসোলের মোমশিল্পী সুশান্ত রায়। তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত অনেক নামি দামি লোকেদের মোমের মূর্তি বানিয়েছি। ফুটবল প্লেয়ার, রাজনৈতিক নেতা, নেত্রী, অভিনেতা, অভিনেত্রী, গায়ক গায়িকা চেস্টা করেছি হুবহু ফুটিয়ে তুলতে। কিন্তু এদের সবার মধ্যে প্রনব বাবুর ব্যাপার টা ছিল একদমি আলাদা। প্রশংসা সবাই কমবেশি সবাই করেছে। কিন্তু প্রনব মুখোপাধ্যায়ের ব্যবহার আমি আজও ভুলতে পারিনি । খুবি ভালো মানুষ, আজও মনে পড়ে যখন প্রনব বাবুর মোমের মূর্তি বানিয়ে প্রনব বাবুকে দিতে গেছিলাম, উনি নিজের মূর্তি দেখে আমাকে বলেছিলেন,“এতো একেবারে জীবন্ত। দেখলে মনে হবে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে আছি। আমার হাইট পেলে কোথায়”? নিজের মোমের মূর্তি দেখে প্রথম এই মন্তব্যই করেছিলেন ততকালীন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। রাইসিনা হিলসে গিয়ে প্রণব বাবুর মূর্তি দিয়ে এসেছিলেন আসানসোলের মোম ভাস্কর্য্য শিল্পী সুশান্ত রায়। ২০১৩ সালে শিল্পী সুশান্ত রায় তৎকালীন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের মোমের মূর্তি তৈরি করে রাইসিনা হিলে পৌঁছে দিয়েছিলেন। একই রকম দেখতে দুজন। অবাক চোখে দেখেছিলেন প্রণববাবু। সেই মুখ, চোখ চুল, গায়ের রং, পোশাক জুতো সব কিছুই এক। দুই প্রণব পাশাপাশি দাঁড়িয়ে, ক্যামেরা বন্দী সেই দৃশ্যটি রাখা রয়েছে মোম ভাস্কর শিল্পী সুশান্ত রায়ের আসানসোলের মহিশীলা কলোনীর গ্যালারিতে। শিল্পীর দাবি, দেশের প্রথম বাঙালি রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়। নিজের থেকেই প্রণব বাবুর মোমের মূর্তি তৈরি শুরু করি। ইন্টারনেট ঘেঁটে। বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত ছবি দেখে শুরু হয় কাজ। দেড় মাসের মধ্যে হুবহু এক মাপের মূর্তিটি তৈরি করে ফেলি। তার আগে আমি অমিতাভ বচ্চন, সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, রোনাল্ডো, কপিল দেব, শচীন তেণ্ডুলকার, জ্যোতি বসুর মূর্তি তৈরি করে ফেলেছি। তিনি বলেন ২০১৩ সালের পর, কলকাতায় যখন মাদার ওয়াক্স মিউজিয়াম তৈরি হয় তখন প্রথম যে ১৯ টি মূর্তির বরাত পেয়েছিলাম তার মধ্যে প্রণব মুখোপাধ্যায়েরও মূর্তিটি তৈরির ওর্ডার ছিল। অর্থ্যাত শিল্পীর দুবার প্রণব বাবুর মূর্তি তৈরি করা সৌভাগ্য হয়েছে। সুশান্ত রায় বলেন, প্রণববাবু আমাকে ডেকে পাঠান। প্রচুর উপহার তুলে দেন। তিনি আমাকে অনেক
উৎসাহ দেন । সেই উনি মানে প্রনব মুখোপাধ্যায় আর নেই ভাবতেই খারাপ লাগছে।