দক্ষতার সঙ্গে কাজ করলে পিছনের সারিতে ঠেলে দেওয়া হয়: রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।
নিউজ বেঙ্গল ৩৬৫ ডেস্ক : শুভেন্দুর সঙ্গেই অনুপস্থিত ছিলেন ক্যাবিনেট মিটিং-এ। তখন থেকেই দলের অন্দরেই প্রশ্ন উঠেছিল। আর এবার কার্যত নাম না করে তৃণমূলের বিরুদ্ধে বোমা ফাটালেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার দলের ভার্চুয়াল মিটিং-এ ‘বিদ্রোহীদে’র কার্যত হুশিয়ারী দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে ক্ষোভের কাছে নেত্রীর কড়া বার্তা যে আদৌ কোনও টোটকা নয়, তার চব্বিশ ঘন্টার মধ্যেই তা বুঝিয়ে দিলেন বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার হরিদেবপুরে একটি অনুষ্ঠানের দল ও দলীয় নেতৃত্বকে কার্যত তুলোধনা করলেন তৃণমূলের অন্যতম স্বচ্ছ ভাবমূর্তির রাজীব। তার বক্তব্য, ‘আমার খুব খারাপ লাগে, যখন যোগ্যতার সঙ্গে কাজ করার চেষ্টা করেছি, যখন দক্ষতার সঙ্গে কোথাও কাজ করার চেষ্টা করেছি, জানি না, কোথায় কী হয়েছে, সঙ্গে সঙ্গে পিছনের সারিতে ঠেলে ফেলে দেওয়া হয়েছে। যে মুখগুলোকে মানুষ পছন্দ করে না, যে মুখগুলোকে মানুষ দেখতে চায় না, যাঁদের সম্বন্ধে মানুষের বিরাট অভিযোগ আছে, যাঁরা দুর্নীতিগ্রস্ত, যাঁরা স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করতে পারেন না, যাঁরা সত্যি কথা বলতে পারেন না, আজকে তাঁরা শুধু স্তাবক বলে সামনের সারিতে আনা হচ্ছে।” রাজনৈতিক মহলের মতে, মমতার মন্ত্রীসভায় নিজের তিক্ত অভিজ্ঞতার কথাই এদিন কার্যত তুলে ধরেন তিনি। বরাবরই কাজের মানুষ ও তৃণমূলে স্বচ্ছ মূখ হিসাবে উঠে আসা রাজীব প্রথমবারই সেচমন্ত্রী হয়ে বদলে দিয়েছিলেন সেচ দফতর। কান পাতলেই শোনা যায় সেচ দফতরের মন্ত্রী হিসাবে তিনি একাধিকবার আটকে দিয়েছিলেন অবৈধ বালি খনন। তাতেই গোসা হয় দলেরই প্রভাবশালী একাংশের। অভিযোগ, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশেই আচমকাই তাকে সরে যেতে হয় সেচ দফতর থেকে। দেওয়া হয় কম গুরুত্বপুর্ণ আদিবাসী ও অনগ্রসর শ্রেণী কল্যাণ দফতরের দায়িত্ব। তবে হাতে এখন বন দফতর। এমনিতেই ‘কাজের লোক’ ও স্বচ্ছ ইমেজের জন্য যথেষ্ট পরিচিতও। ‘ভালো কাজ’ করলেও ঠিক সেইভাবে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের নেক-নজরেও থাকেননি রাজীব। যা নিয়ে একাধিকবার দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরেও দিয়েছেন তিনি। এমনকী আমফান পরবর্তী সময়ে দলের নেতাদের লাগামহীন ‘দুর্নীতি’ নিয়েও মূখ খুলেছেন। এদিন বনমন্ত্রী আরও বলেন, “মানুষকে যাঁরা বোকা ভাবেন, তাঁরা মূর্খের স্বর্গে বাস করেন। এখন হচ্ছে, স্তাবকতার যুগ। অর্থাৎ আমি ভালো বললে ভালো বলতে হবে। আমি খারাপ বললে খারাপ বলতে হবে। অর্থাৎ শুধুমাত্র হ্যাঁ’তে হ্যাঁ, না’তে না – এটুকু বলতে পারলেই তুমি ভালো। নয়তো তুমি খারাপ। আজ আমরা এরকম একটা পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু এগুলি মানুষ পছন্দ করেন না।’